বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গুলোর মধ্যে আমি আপনাকে বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা সম্পর্কে এখন কিছু কথা বলব । বিনা পুঁজি হচ্ছে আপনি যে ব্যবসা গুলো করার আগে কোন ধরনের টাকা পয়সা ইনভেস্ট করতে হবে না । অর্থাৎ কোন ধরনের টাকা পয়সা বিনিয়োগ ছাড়াই আপনি যে সকল ব্যবসা শুরু করতে পারবেন সেগুলোকে বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা বলা হয় । 

বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা

চলুন এখন আমরা বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা কিছু আইডিয়া নেই।

১. কম্পিউটার বা ল্যাপটপ সার্ভিসিং ব্যবসা

এই ব্যবসা গুলোর মধ্যে আপনারা নিঃসংকোচে এই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ঠিক করার ব্যবসা টাকে ধরতে পারেন । কারণ এখন যেহেতু প্রযুক্তির দুনিয়া তাই প্রায় প্রত্যেকটা মানুষ তাদের নিজেদের কাজগুলো করার জন্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কিনে সেগুলো ব্যবহার করতে থাকে । কিন্তু এই ল্যাপটপ বা ডেক্সটপ এর সিস্টেম যেহেতু একটু বেশি কঠিন তাই তারা সেগুলো ব্যবহার করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এমনকি তাদের ভুলের কারণে তাদের এই যন্ত্রাংশ গুলো বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে যায়। তখন তারা সেগুলোকে রিপেয়ারিং করার জন্য অভিজ্ঞ সার্ভিসিং সেন্টার খুজতে থাকে ।

এই ল্যাপটপ গুলোর দাম বেশি হওয়ার কারণে সেগুলোর সার্ভিসিং করার দাম ও অনেক বেশি হয়ে থাকে । আপনারা যদি এই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার সার্ভিসিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে মানুষ আপনার কাছে তাদের যন্ত্রাংশগুলো সার্ভিসিং করার জন্য নিয়ে যাবে। আর যদি আপনি ভালভাবে সার্ভিসিং করে দিতে পারেন তাহলে তারা সারা জীবনের জন্য আপনার কাস্টমার হয়ে যাবে আর আপনি তাদের থেকে প্রচুর পরিমাণে টাকা ইনকাম করার সুযোগ পেয়ে যাবেন । 

তবে হ্যাঁ অবশ্যই আপনার কাস্টমারের সাথে ভালো ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন, এবং তাদের কাজগুলো সময় মত তাদেরকে বুঝিয়ে দিবেন। তাহলে আপনি এই বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা করার মাধ্যমে অনেক বেশি লাভজনক হতে পারবেন ।

২. পুরাতন মোবাইল ফোনের ব্যবসা।

বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে এই পুরাতন মোবাইল ফোনের ব্যবসা একটি অনেক বেশি জনপ্রিয় । এখনকার যুগে যেহেতু নতুন ফোন গুলোর দাম অনেক বেশি তাই প্রচুর মানুষ এখন ফোনগুলো কিনে ব্যবহার করে থাকে। আর এর জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের পুরাতন মোবাইল ফোনের ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত মোবাইলটি ক্রয় করে ।

আর যাদের এলাকায় পুরাতন মোবাইল ফোনের ব্যবসায়ী নেই তারা চাইলে নিঃসন্দেহে বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে এই ব্যবসাটা শুরু করে দিতে পারেন তাহলে আপনি কম সময়ের মধ্যে অনেক বেশি লাভবান হয়ে যেতে পারবেন । একটি পুরাতন ফোন আপনি ১ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন আর যদি পাইকারি রেটে ক্রয় করেন তাহলে আরও অনেক কম মূল্যে সেগুলো ক্রয় করতে পারবেন ।

এত কম মূল্য দিয়ে  ক্রয় করে আপনি এগুলো কাস্টমারদের কাছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বা এরও অধিক টাকা মূল্যে খুব সহজে বিক্রি করতে পারবেন ।

তবে এর জন্য আপনাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরাতন মোবাইল ফোন গুলো ক্রয় করে এনে আপনার কাছে সংরক্ষণ করতে হবে। এবং পরবর্তীতে আপনি সেগুলো বিক্রি করে অনেক বেশি টাকা রোজগার করে নিতে পারবেন।

৩. কসমেটিক্স পণ্যের ব্যবসা

আমাদের মা ও বোনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস আছে এই কসমেটিক্স পণ্য । আমাদের দেশে কোন মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে এই কসমেটিক্স পণ্য বা কসমেটিক্স এর জিনিস ব্যবহার করে না । প্রত্যেক মা-বোনই কসমেটিকসের পণ্য অনেক বেশি পছন্দ করে থাকে । এই কসমেটিকস পণ্যগুলো যদি আপনি সরাসরি ফ্যাক্টরি থেকে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে কেনা দামের প্রায় ডাবল দামে বিক্রি করতে পারবেন আপনার কাস্টমারদের কাছে ।

তাই আপনি যদি এই ব্যবসাটা একবার শুরু করে দিতে পারেন তাহলে আমি মনে করি আপনি এখান থেকে অনেক বেশি টাকা লাভ করে নিতে পারবেন । অবশ্যই আপনি মা ও বোনদের সাথে অনেক ভাল আচরণ করবেন এবং তাদেরকে সুলভ মূল্যে পণ্যগুলো দিবেন তাহলে আপনার ব্যবসা খুব অল্প সময়ের মধ্যে অনেক বেশি বিস্তার লাভ করবে ।

আর একটা কথা হচ্ছে আপনার এই কসমেটিক্সের দোকান এমন এক জায়গায় বসাবেন যেখানে মেয়েদের যাতায়াত অনেক বেশি থাকে। আর অবশ্যই আপনার দোকানের কসমেটিক্স গুলো অনেক ভালোভাবে সাজিয়ে রাখবেন তাহলে খুব অল্প সময়ে অনেক বেশি জিনিসপত্র বিক্রি করে ফেলতে পারবেন ।

৪. নতুন মোবাইল ফোন বিক্রির ব্যবসা

গ্রাম হক কিংবা শহর প্রত্যেক জায়গার মানুষ এখন নতুন ফোন কেনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে । আর এখন নতুন ফোনের বিক্রি ও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়ে গেছে । কারণ প্রত্যেকটা মানুষ এখন নতুন নতুন ফোন কিনে ব্যবহার করা শুরু করেছে ।

তো আপনি এই সুবর্ণ সুযোগটাকে ব্যবহার করে আপনার নতুন মোবাইল ফোনের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন । এখানে বলে রাখি আপনি এই নতুন মোবাইল ফোনগুলো বড় বড় শোরুম থেকে অনেক কম দামে কিনে সেগুলো মানুষের কাছে অনেক বেশি টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি করে ফেলতে পারবেন ।

তাই আমি বলব বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গুলোর মধ্যে এই নতুন ফোন বিক্রি করার ব্যবসাটা অনেক বেশি লাভবান বা অনেক বেশি আকর্ষণীয় একটি ব্যবসা । তবে অবশ্যই কোন খারাপ মোবাইল ফোন নিয়ে আসবেন না ভালো ভালো মোবাইল ফোন গুলো আপনার কাস্টমারদের কাছে  প্রোভাইড করার চেষ্টা করবেন ।

৫. বিকাশ এজেন্ট এবং মোবাইল রিচার্জের ব্যবসা

বর্তমানে যেহেতু মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে আর মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে গেলে এটাতে অবশ্যই রিসার্চ করতে হয় । আর মানুষ এখন তাদের মোবাইল ফোনগুলোতে প্রচুর পরিমাণে রিচার্জ করে থাকে । 

এছাড়াও এখন যেহেতু বিকাশ নগদ বা এই ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং গুলোর জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে গেছে তাই মানুষ এগুলো ব্যবহার করেও অনেক বেশি লেনদেন করে থাকে । যার কারণে আপনি যদি এই বিকাশ এজেন্ট বা মোবাইল রিসার্চ এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন তাহলে আশা করি অবশ্যই এখান থেকে ভালো ফলাফল পাবেন ।

একজন বিকাশ এজেন্ট প্রতি মাসে যদি দুই লাখ টাকা লেনদেন করতে পারে তাহলে এখান থেকে তার ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা অনায়াসে লাভ উঠে আসবে । এছাড়াও  বিকাশ এজেন্ট হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য যে মোবাইল ব্যাংকিং গুলো আছে যেমন নগদ ,উপায় বা রকেট এগুলোর এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ও আপনি নিয়ে সেগুলো ব্যবহার করে অনেক বেশি টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন ।

তবে এই মোবাইল রিচার্জ বা এজেন্ট এর ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আপনার ক্যাশে ভালো পরিমাণ টাকা রাখতে হবে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি কাস্টমারদের কে লেনদেন করে দিবেন । যেহেতু এই ব্যবসা করতে হলে আপনাকে কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে হবে তাই এটি বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা না হলেও বর্তমান সময়ে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হিসেবে এটি অবশ্যই স্বীকৃতি পাবে ।

অনলাইন ব্যবসা করার নিয়ম – বিভিন্ন ধাপসমূহ

শেষকথা: আজকে আমি আপনাদের সাথে বর্তমনে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গুলোর মধ্যে যেগুলো বেশি জনপ্রিয় এবং যেগুলো করে বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা করা যাবে সেই ব্যবসাগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরেছে । 

পুরো পোস্টে মোটামুটি ১০ টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে । এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে এতগুলো ব্যবসা তো একজন করা সম্ভব নয় তাহলে আমি কোন ব্যবসা করব ।

আমি আপনাকে বলা এই ব্যবসার মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা গুলাই বেশি উল্লেখিত আছে এছাড়া বিনা পুজিতে লাভজনক ব্যবসা তো আছেই। এগুলোর মধ্যে যে ব্যবসাটা আপনার সব থেকে বেশি ভালো লাগবে বা যে ব্যবসাটা আপনি খুব ভালোভাবে করতে পারবেন অবশ্যই আপনার সেই ব্যবসাই করা উচিত ।

এছাড়াও আপনি যে এলাকায় থাকেন সেই এলাকায় এই উল্লেখিত লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া গুলোর মধ্যে যে ব্যবসা সবথেকে ভালো চলবে সেটা