স্টাফ রিপোর্টার: শ্রীমঙ্গলে দীপক দাস নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন এবং তার ১৩ বছরের শিশু সন্তানকেও কুপিয়ে বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার, ৬ আগস্ট রাত ৯টায় মুঠোফোনে শ্রীমঙ্গল থানার এস.আই অলক বিহারী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে শ্রীমঙ্গল শহরের পূর্বাশা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। তবে অভিযুক্ত এবং আহত কাউকে পাইনি। শুনেছি পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী দীপক দাস কুপিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে আহত করে পালিয়ে গেছেন।
স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় আহত মা ও মেয়েকে চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজারে নিয়ে যান। আহতরা হলেন অভিযুক্ত দিপক দাসের স্ত্রী গৌরি দাস (৩৫) ও তার শিশু সন্তান অন্তিকা দাশ (১৩)।
স্থানীয়রা জানান, আহত গৌরি দাসের গলায়, বুকে, পেটে কাধে, কুপিয়ে গুরতর আঘাতের চিহ্ন এবং ১৩ বছরের শিশু অন্তিকা দাশের বাম হাত কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ডান হাতের দুটি আঙুল ঝুলন্ত অবস্থায় তারা দেখেছেন। ঘটনার কারণ জানতে আহত পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে, স্থানীয় প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, স্বামী দীপক এবং স্ত্রী গৌরী দাসের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ হতো। তাদের কলহ মিমাংসায় মাঝেমধ্যে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসতেন। বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর রাত প্রায় ১-২টার সময় প্রতিবেশীরা গভীর ঘুমে থাকায় এগিয়ে আসতে পারেননি। পরে জানাজানি হলে স্থানীয়রা এসে আহতের হাসপাতালে পাঠান এবং শ্রীমঙ্গল থানায় খবর দেন।
স্থানীয়রা জানান, দীপস দাসের বাড়ি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়, তার বাবার নাম : গুরুপদ দাস। প্রথমে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বসবাস করতেন। পরে স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পূর্বাশা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। ঘটনার পর থেকে দীপস দাস পলাতক রয়েছেন।
মুমূর্ষু অবস্থায় আহত মা ও মেয়েকে প্রথমে মৌলভীবাজার লাইফ লাইন হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।
প্রতিবেশীর বরাত দিয়ে শ্রীমঙ্গল থানার সাব ইন্সপেক্টর অলক বিহারী জানান, রাতে খবর পেয়ে আমি কয়েকজন পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ঘটনার প্রকৃত কারণ এখন পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি। তবে প্রতিবেশি সূত্রে জানা গেছে দীপকের স্ত্রী স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিকে কাজ করেন। আর স্বামী টমটম চালান। স্বামীর চাইতেন না তার স্ত্রী ডায়াগনস্টিকে কাজ করুক। আর এটা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কলহ হতো। হয়তো পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি বলে জানান এস.আই অলক বিহারী। তবে আজও (শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর) আহত পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছেন এবং অভিযুক্ত পলাতক স্বামীকে খুঁজতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও এস.আই অলক বিহারী জানান।